জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি, বহিস্কার ও কমিটিতে বাদ দেয়া সব নেতাকর্মীদের পার্টিতে অর্ন্তভূক্তির আদেশ দিয়েছেন পার্টির প্রধানপৃষ্ঠপোষক ও সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ।
বুধবার ২১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের প্যাডে পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের কাছে পাঠানো নির্দেশনামূলক এক চিঠিতে তিনি এই আদেশ দেন। চিঠি স্বাক্ষর করা হয় মঙ্গলবার ২০ সেপ্টেম্বর।
জাপা চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে বেগম রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির সর্বময় ক্ষমতার সংরক্ষক হিসেবে পার্টির গঠনতন্ত্রের ধারা-২০ এর উপধারা-১; প্রধান পৃষ্ঠপোষকের ক্ষমতাবলে গঠনতন্ত্রের বিশেষ ক্ষমতা এবং মৌলিক অধিকার পরিপন্থী ধারা ২০ এর উপধারা ২ এর সব বিধান স্থগিতের নির্দেশনা দিয়েছেন।
এতে রওশন এরশাদ বলেন, ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে অনুমোদিত পার্টির গঠনতন্ত্রের ধারা-২০ এর উপধারা ১ এর সব বিধান অপব্যহৃত হয়। যা গনতন্ত্র ও সংবিধান পরিপন্থী।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের বিধি বিধান মেনেই তার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। সেখানে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র লংঘ্ননের সুযোগ নেই। শুধু তাই নয়, দেশজুড়ে পার্টির সব তৃণমূল নেতাকর্মীরাও এসব ধারার বিপক্ষে। এটা বাতিল চায় লাখ লাখ পল্লীবন্ধু প্রেমি কর্মী সমর্থক।
জাপা প্রধানকে পাঠানো আদেশে প্রধান পৃষ্ঠপোষক বলেন, আপনার মন্তব্য অনুযায়ী সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সংসদ ও সরকার পরিচালনা ব্যবস্থা যেমন এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে, ঠিক তেমনই নবম সম্মেলনের মাধ্যমে দলীয় গঠনতন্ত্রে ২০ ধারার উপধারা ১ এর সব উপধারা ও অনুচ্ছেদ। এর মাধ্যমে যখন তখন তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যন্ত কোনো ধরনের শোকজ বা বিনা নোটিশে বহিস্কার ও অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে।
যা একজন রাজনৈতিক কর্মীর গণতান্ত্রিক অধিকারকে ক্ষুন্ন করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রকৃতপক্ষে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ গৃহীত হওয়ার একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও যৌক্তিকতা রয়েছে। কিন্তু জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০ ধারার ১(১), উপধারা-২ ও উপধারা-৩ বর্ণিত বিধানাবলীর সঙ্গে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের ন্যূনতম কোনো মিল নেই।
পল্লীবন্ধুপত্নী বেগম রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির অভিভাবক হিসেবে সারা দেশের লাখ লাখ নেতাকর্মীর দাবি মেনে দলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দশম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত এসব ক্ষমতা স্থগিত করা হলো উল্লেখ করে তা কার্যকরের নির্দেশনা দেন।
পল্লীবন্ধুর সহধর্মিনী রওশন এরশাদের নির্দেশনা মতে, এরইমধ্যে দলীয় কর্মকান্ড পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়, বিগত দিনে দলের বহু সিনিয়র, অভিজ্ঞ, দায়িত্বশীল পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের নিস্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। পদোন্নতি বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। এতে করে পার্টিকে দিনে দিনে দূর্বল করা হয়েছে।
করা হয়েছে খন্ডিত। পার্টির মধ্যে অগণতান্ত্রিক আবহ থাকায় নেতাকর্মীরা বিভ্রান্ত হচ্ছে এবং পদ হারানোর ভীতি ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে আবারো পার্টি খন্ডিত হওয়ার আশংঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রওশন এরশাদ আরো বলেন, এ অবস্থা অবসানের লক্ষ্যে এবং পার্টি শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে মশিউর রহমান রাঙা এমপি, সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গাফফার বিশ্বাস,এছাড়া নবম সন্মেলনের পর, পদ পদবিতে না রাখা সাবেক মন্ত্রী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য এমএ সাত্তার, সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, কাজী মামুনুর রশীদ, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, সাবেক উপদেষ্টা অ্যাড. মাহবুবুল আলম বাচ্চু, সাবেক সংসদ সদস্য ও দলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরুসহ দেশজুড়ে অব্যাহতি, বহিস্কার ও নিষ্ক্রিয় করে রাখা সব নেতাকর্মীদের এই আদেশ জারির পর হইতে যার যার আগের পদ পদবিতে অর্ন্তভূক্ত করা হলো।
।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।